ক্লাউড ই স্টোর চালু হওয়ার পর থেকে আমরা কিছু প্রশ্ন প্রায়ই শুনতে পাচ্ছি। হয়তো আপনার মনেও এমন প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে।
আপনারা ফ্রীতে কেন দিচ্ছেন?
ফ্রীতে দিয়ে আপনাদের লাভটা কি?
আপনাদের এটা কোন স্ক্যাম নাকি?
আমার ওয়েবসাইটের ডাটা আপনারা চুরি করে কোন অসৎ কাজে লাগাবেন কি না?
এখন ফ্রী দিচ্ছেন পরে আবার পেমেন্ট করতে হবে কি না?
হিডেন কোন চার্জ বা পলিসি আছে কি না?
এছাড়াও আরো কিছু প্রশ্ন। আজকে আপনাদের মনে দানা বাঁধা এসব প্রশ্নের উত্তরই দেয়ার চেষ্টা করছি।
ক্লাউড ই স্টোরের প্রথমত প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশের এলোমেলো ই-কমার্স এবং এফ কমার্স প্রতিষ্ঠান এবং উদ্যোক্তাদের গুছিয়ে নিয়ে আসা। গুছিয়ে আনা বলতে বোঝানো হচ্ছে সবাই যেন একটা নির্দিষ্ট ধারা অবলম্বন করে অর্থাৎ এই যে অনেকে ফেসবুকে মেসেঞ্জারে অ্যাড চালায় কিংবা বিভিন্ন গ্রুপে গ্রুপে তাদের প্রোডাক্ট এবং সার্ভিস শেয়ার করে সেল করার চেষ্টা করেন। এভাবে করা গেলেও আসলে সরাসরি ই-কমার্স বলা যায় না এটাকে। তারা যেন একটা স্ট্যান্ডার্ড মেইনটেইন করে তাদের ওয়েবসাইটে তাদের প্রোডাক্ট এবং সার্ভিস গুলো লিস্টিং করে। তাহলে তাদের ক্রেতাগণ খুব সহজে তাদের ওয়েবসাইটে গিয়ে তাদের পণ্যের সকল বিবরণ সহ দেখতে পারছেন এবং সেখান থেকে কেনাকাটার সুযোগ থাকছে। মোট কথা বলতে পারেন যারা অনলাইন বা ই-কমার্স বা এফ-কমার্স ব্যবসা করতে চাচ্ছেন সকলকে আমরা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পণ্য এবং সেবা বিক্রয়ের জন্য উদ্বুদ্ধ করছি। যখন বাংলাদেশের অধিকাংশ এই ধরনের ব্যবসাকে আমাদের ক্লাউড ই স্টোরে লিস্টেড করতে পারব। তখন ক্রেতাদেরও অনেকটাই সুবিধা হয়ে যাবে। ক্রেতারা একটি প্লাটফর্মে এসে তাদের প্রয়োজনীয় পণ্যটি ক্রয় করতে পারবে। অর্থাৎ অনেকটা মার্কেট প্লেস এর মত কাজ করবে, যদিও এই অপশনটি এখনো আমরা রাখিনি তবে আমাদের একটি টার্গেট রয়েছে সেই টার্গেট পূরণ হয়ে গেলে আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে এই লিস্টিং সিস্টেমটিও করব। এছাড়াও আমরা আমাদের এখানে লিস্টেড হওয়া সকল ওয়েবসাইটকে অবজারভেশনের মধ্যে রাখবো তাহলে আমাদের এই প্লাটফর্ম ব্যবহার করে কাস্টমারদেরকে ঠকানো কিংবা স্ক্যামিং করার চেষ্টা করলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে সহজে অ্যাকশন নিতে পারব। তাই কাস্টমারের কেনাকাটা হবে সুরক্ষিত।
এ তো গেল কাস্টমার ও বিক্রেতার সুবিধা এবার আসুন জেনে নেই এখান থেকে কিভাবে আয় করতে পারি।
আপনারা যদি আমাদের ওয়েবসাইটের প্রিমিয়াম সার্ভিস গুলো দেখেন সেখানে কিছু সার্ভিস রয়েছে, সার্ভিস গুলো দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হচ্ছে,
কাস্টম ডোমেইন আইডেন্টিটিঃ
আমরা আমাদের এখানে শুধুমাত্র ফ্রি সাবডোমেইন লিংক দিয়ে থাকি ওয়েবসাইটটি চালানোর জন্য। কিন্তু অনেকেই তাদের ওয়েবসাইটের জন্য একটি কাস্টম ডোমেইন যুক্ত করতে চান, সেক্ষেত্রে আমরা একটি সার্ভিস চার্জ নিয়ে থাকি। যা ডেইলি, মান্থলি কিংবা ইয়ারলি সাবস্ক্রিপশন হিসেবে হয়ে থাকে।
ওয়েবসাইট কাস্টমাইজেশন ও ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসঃ
আপনি আমাদের এখানে সিস্টেমটি ব্যবহার তো করলেন আপনাকে তো ওয়েবসাইটটি কাস্টমাইজেশন করতে হবে তাই না? এটা তো সবাই কাস্টমাইজেশনটি পারেনা, না পারলে আমাদের এখান থেকে সেই সার্ভিসটি নিতে পারবেন। আমরা আপনাদের মত করে ওয়েবসাইটটি কাস্টমাইজ করে দেব এজন্য নির্দিষ্ট একটি এককালীন সার্ভিস চার্জ রয়েছে। এছাড়াও অনেকে চান যে আপনার ওয়েবসাইটটির সকল ম্যানেজমেন্ট আমরা করি তো তাদের জন্য আমরা মাসিক একটি সাবস্ক্রিপশন চার্জ নিয়ে সেটি করে থাকি।
ডিজিটাল মার্কেটিং সেবাঃ
একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের জন্য ফ্রী ডিজিটাল মার্কেটিং এর পাশাপাশি পেইড ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি তাই ফ্রি মার্কেটিং এর পাশাপাশি পেইড মার্কেটিং এর জন্য ফেসবুক এড, গুগল এড এগুলোর ব্যবহার করতে হয় কিন্তু অনেকেই সেটি করতে পারেন না কিংবা বিভিন্ন এজেন্সির কাছ থেকে করে নেন, আমরা সেই সার্ভিসগুলোও দিয়ে থাকি।
গ্রাফিক্স ডিজাইন সার্ভিসঃ
যেকোনো ধরনের ডিজিটাল ব্যবসার ক্ষেত্রে অবশ্যই অবশ্যই গ্রাফিক্স ডিজাইন একটি আবশ্যকীয় বিষয়। ই-কমার্স এর ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নয়, একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে প্রচুর পরিমাণ গ্রাফিক্সের প্রয়োজন হয়।
অনেক উদ্যেক্তাই রয়েছেন যারা তাদের গ্রাফিক্স ডিজাইন বিভিন্ন প্রকার প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে করিয়ে নিয়ে থাকেন। সেটিও খুব সহজে আমাদের এখান থেকেও নিতে পারবেন।
ডোমেইন হোষ্টিং সেবাঃ
আমাদের ক্লাউড ই স্টোর প্লাটফর্ম এ কাস্টম ডোমেইন সার্ভিস এর জন্য তো ডোমেইন কেনার প্রয়োজন হয় এছাড়াও এর বাহিরে যারা তাদের ওয়েবসাইট এর জন্য ডোমেইন কিনতে চান তারা চাইলে আমাদের এখান থেকেও ডোমেইন ক্রয় করতে পারবেন। কিংবা অনেকেই রয়েছেন যারা তাদের বিজনেস এর জন্য একদম ডেডিকেটেড কাস্টমাইজড ওয়েবসাইট তৈরি করে নিতে চান তারা চাইলে আমাদের এখান থেকে হোষ্টিং ও ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সেবাগুলোও গ্রহণ করতে পারবেন।
উপরোক্ত বিষয়গুলো ছাড়াও আরো অনেক ধরনের কাজ রয়েছে বা সার্ভিস রয়েছে যেগুলো একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়, যেগুলো খুব সহজেই একই ছাতার নিচে আমাদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট চার্জ অথবা সাবস্ক্রিপশন চার্জ প্রদানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রহণ করতে পারবে। আর সেগুলো থেকে আমাদের প্রতিষ্ঠানের আয় হয়ে থাকে।
একটা উদাহরণ দেই আপনাদেরকে। ধরুন ফেসবুক কিংবা গুগল এর বেসিক বেশীরভাগ সার্ভিসগুলো কিন্তু আপনারা ফ্রি তে ব্যবহার করতে পারছেন। তাহলে তারা কিভাবে আর্নিং করছে এটি কি প্রশ্ন থাকে না? তারা বেসিক সার্ভিস গুলো ফ্রিতে দিলেও তাদের অনেকগুলো সার্ভিস রয়েছে যেগুলো পেইড। তারা মূলত সেগুলো থেকেই তাদের আয় জেনারেট করেন। তাদের পেইড সার্ভিস থাকলেও তারা কিন্তু জেনারেল সার্ভিস ব্যবহারকারীদেরকে তাদের পেইড সার্ভিস ব্যবহার করার জন্য ফোর্স করে না কখনো। ঠিক তেমনি আমরাও আমাদের ফ্রি ওয়েবসাইট ব্যবহার করলেও পেইড সার্ভিস গুলো ব্যবহার করার জন্য কখনোই ফোর্স করি না বা করবো না। কিন্তু আমরা আমাদের গ্রাহকদেরকে এমনভাবে সেবাগুলো প্রদান করি যেগুলো তাদের বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রহণ করতে হলে যেমন অনেক অর্থ ব্যয় হবে তেমন অনেক ঝামেলাপূর্ণ, কিন্তু আমাদের এখান থেকে নিলে ঝামেলাও যেমন কমে যাবে অর্থ ব্যয়ও তেমন কমে যাবে। অর্থাৎ উভয়ের জন্য উইন উইন সিচুয়েশন।
এবার বলি তথ্য চুরি বা এগুলো অসৎ কাজে ব্যবহারের কথা। আমরা আমাদের সেবার মাধ্যমে তো ইনকাম জেনারেট করতেছি তাহলে ক্রেতাদের ডাটা চুরি করে সেগুলো মেনুপুলেশন করার তো কোন প্রয়োজন পড়ে না তাই কিনা? তার মানে আমাদের এখানে ডাটা চুরি কিংবা অসৎ কাজে ব্যবহার করার কোন সুযোগ নেই। আর স্ক্যাম করছি কিনা এসব তো উপরের বিষয়গুলো পড়ে আশা করি বুঝতে পেরেছেন। এখন ফ্রিতে দিচ্ছি পরে কোন সার্ভিস চার্জ নিব কিনা এটার সহজ উত্তর হচ্ছে, আমরা এখন যেমন ফ্রি দিচ্ছি তেমন সব সময়ের জন্য ফ্রিতেই পাবেন। আপনি আমাদের এই সার্ভিসটি ফ্রীতে চালালেও কোন না কোন সময় আমাদের পেইড সার্ভিস গ্রহণ করবেন সেটাই আমাদের প্রত্যাশা এবং সেখান থেকেই আমাদের আর্নিং হবে।
অবশেষে আমরা আমাদের আয়ের যেমন প্রত্যাশা রয়েছে, ঠিক তেমনই বাংলাদেশের ই-কমার্স সেক্টরে একটি অভূতপূর্ব পরিবর্তন নিয়ে আশার চেষ্টা করছি। যেখানে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েই সঠিক সেবা গ্রহণ ও প্রদান করতে পারে।